লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ২৫সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ পানি বৃদ্ধির কারণে বর্তমানে লালমনিরহাট জেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকাল ৩টা থেকে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ২৯মিটার। যা (বিপদসীমা ২৮দশমিক ৭৫সেন্টিমিটার) যা বিপদসীমার ২৫সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা নদীর তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়া পয়েন্টে পানির প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫১দশমিক ৯১মিটার। যা (বিপদসীমা ৫২দশমিক ১৫সেন্টিমিটার) যা বিপদসীমার ২৪সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ভোর ৬টা থেকে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্ট পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার উপরে থাকলেও বিকাল ৩টার পর থেকেই আবারও বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী এলাকার মানুষ এবার বন্যার কবলে পড়েছেন।
পানির প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম, হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, সিংগিমারী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, কাকিনা, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, রাজপুর, গোকুন্ডা ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে পানিবন্দি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দাবি, তিস্তায় এটি স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে। তবে বৃষ্টির কারণে উজানের ঢেউয়ের ফলে পানির প্রবাহ বেড়েছে। ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানির প্রবাহ কমেছে বলে দাবি করেছে ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফাউদ্দৌলা। তবে তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্ট বেড়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, তিস্তার কাউনিয়া পয়েন্ট পানির প্রবাহ বেড়েছে। বর্তমানে তিস্তা ব্যারাজের সবগুলো জলকপাট খোলা রয়েছে। তবে ভারতে পানির প্রবাহ কমে গেলে তিস্তার পানি আরও কমবে বলে জানান তিনি।
এদিকে ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে পানি সমতল ৩০.৮৫মিটার (বিপদসীমা ৩১.০৯মিটার) যা বিপদসীমার ২৪সেন্টিমিটার নিচে।
তবে, ধরলা নদীর অববাহিকায় লালমনিরহাটের মোগলহাট, কুলাঘাট ও বড়বাড়ী ইউনিয়নের কিছু কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
এছাড়াও লালমনিরহাটের রত্নাই, স্বর্ণামতি, সানিয়াজান, সাকোয়া, চাতলা, মালদহ, ত্রিমোহীনি, মরাসতি, গিরিধারী, গিদারী, ধোলাই, শিংগীমারী, ছিনাকাটা, ধলাই ও ভেটেশ্বর নদীতে পানিও বাড়তে শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, লালমনিরহাটে বৃষ্টিপাত ৩৬মিলিমিটার।
অপরদিকে দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ও ধরলা নদীসমূহের পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে এবং লালমনিরহাট জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদী বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে মর্মে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।